অনলাইন ডেস্কঃ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধান বনজ কুমার মজুমদারের মামলায় সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেনকে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার (২ অক্টোবর) ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াত এ আদেশ দেন।
এদিন ইলিয়াসের সম্পত্তি ক্রোক তামিলের বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল। তবে তার সম্পত্তি পাওয়া যায়নি বা ক্রোক করা যায়নি মর্মে প্রতিবেদন দাখিল করে টঙ্গী পশ্চিম থানা পুলিশ। তাই আদালত তাকে হাজির হতে দুটি জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আদেশ দেন। ইলিয়াস হাজির না হলে তার অনুপস্থিতিতেই চার্জগঠনের জন্য দিন ধার্য করা হবে।
এর আগে, ২৫ জুলাই পুলিশ প্রতিবেদন আমলে নিয়ে পুলিশের সাবেক এসপি বাবুল আক্তার ও বাবা মো. আব্দুল ওয়াদুদ মিয়াকে অব্যাহতির আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। অপরদিকে সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন ও বাবুল আক্তারের ভাই মো. হাবিবুর রহমান লাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নজরুল ইসলাম শামীম এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
গত ৯ এপ্রিল মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ধানমন্ডি মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) মো. রবিউল ইসলাম বাবুল আকতার, ইলিয়াস হোসেনসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিটভুক্ত অপর দুই আসামি হলেন, বাবুল আক্তারের ভাই মো. হাবিবুর রহমান লাবু ও বাবা মো. আব্দুল ওয়াদুদ মিয়া।
গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় বাদী বনজ কুমার মজুমদারের পক্ষে ধানমন্ডি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন পিবিআই ঢাকা মেট্রো উত্তরের পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম। মামলায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে অভিযোগ আনা হয়েছে।
২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরের নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে খুন হন বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতু। এ ঘটনা দেশজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। ঘটনার সময় মিতুর স্বামী তৎকালীন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার অবস্থান করছিলেন ঢাকায়। চট্টগ্রামে ফিরে তিনি অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।
পিবিআইয়ের তদন্তে বেরিয়ে আসে, মিতু হত্যাকাণ্ডে বাবুলের সম্পৃক্ততা রয়েছে। এ অভিযোগে ২০২১ সালের ১২ মে বাবুলের দায়ের করা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার দিন বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ থানায় মামলা দায়ের করেন মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন। ওইদিনই এ মামলায় বাবুলকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
বাবুলের স্ত্রী মিতু হত্যা মামলার তদন্ত নিয়ে প্রবাসী সাংবাদিক ইলিয়াস হোসাইন তার ইউটিউব চ্যানেল থেকে একটি ভিডিও প্রকাশ করেন। সেই ভিডিওতে বলা হয়, এ মামলায় বাবুল আক্তারকে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ফাঁসিয়েছেন পিবিআই প্রধান। এ ছাড়া তাকে রিমান্ডে নির্যাতন করা হয়েছে, মিথ্যা সাক্ষীও সাজানো হয় বলে ভিডিওতে প্রকাশ করা হয়। এ কারণে তার বিরুদ্ধে ধানমণ্ডি থানায় মামলাটি করেন পিবিআই প্রধান বনজ কুমার।