নিজস্ব প্রতিবেদকঃ পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে সড়ক পথে বেড়েছে বরিশালগামী যাত্রীদের চাপ। অন্য বছর লঞ্চে আসলেও এবছর সড়ক পথেই বাড়ি ফিরছেন অধিকাংশ বরিশালবাসী। ফলে লঞ্চগুলোতে এখন পর্যন্ত ভিড় লক্ষ্য করা যায়নি। অনেকেই এখন স্বল্প সময়ে ঢাকা থেকে বরিশাল আসতে বেছে নিচ্ছেন বাস যাত্রা। আর যাত্রীদের কথা মাথায় রেখে বিভিন্ন কোম্পানি তাদের নতুন নতুন বাস চালু করেছে এই রুটে।
বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) সকালে নগরীর নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, ঈদ উপলক্ষে একের পর এক বাসে ঢাকা থেকে বরিশাল আসছেন যাত্রীরা। টার্মিনাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত কয়েকদিন ধরেই যাত্রীদের এমন চাপ রয়েছে। তবে যাত্রীদের এই চাপ বৃহস্পতিবার বিকেলের পর আরও বাড়বে। যাত্রীরা জানান, পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে ছুটি পেয়েই সড়ক পথে পদ্মা সেতু হয়ে বরিশাল আসছেন তারা।
তবে যাত্রীদের অভিযোগ, স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে এখন ভাড়া বেশি নিচ্ছে বাস কর্তৃপক্ষ। আগে যেখানে ৪৫০ টাকা থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে বরিশাল আসা যেত, সেখানে এখন ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায় টিকিট কিনে আসতে হচ্ছে।
সাদ্দাম হোসেন নামে এক যাত্রী বলেন, ঢাকা থেকে হানিফ পরিবহনে অন্য সময়ে ৫০০ টাকা টিকিট হলেও এখন ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা নিচ্ছে। একরকম বাধ্য হয়েই ৭০০ টাকার টিকিটে এসেছি।
আরেক যাত্রী শহীদ বলেন, বাস কর্তৃপক্ষ চলতি পথে তাদের ইচ্ছামতো গাড়িতে অতিরিক্ত লোক নিচ্ছে। আর এসব দেখার জন্য ঢাকা থেকে বরিশাল আসতে পথে প্রশাসনের কোনো নজরদারি চোখে পড়েনি। এগুলো নজরদারি না করলে কোনো ধরনের দুর্ঘটনা ঘটলে অনেক প্রাণহানি ঘটবে। তাই প্রশাসনের উচিত এগুলো তদারকি করা।
সুমন নামে আরেক যাত্রী বলেন, আগে ঈদের ছুটিতে লঞ্চেই বরিশাল আসা হতো। এখন পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে বাসেই আসা-যাওয়া করি। কারণ, তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টায় ঢাকা বরিশাল আসা যাওয়া করা যায়।
বরিশাল জেলা বাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক কিশোর কুমার দে বলেন, নথুল্লাবাদে যানজট নিরসনে আমাদের উদ্যোগে এবং প্রশাসনের উদ্যোগে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বাসগুলো এসে যাত্রী নামিয়ে যেন আবার ফিরে যেতে পারে সেই নির্দেশনা দেওয়া আছে। এখনো উল্লেখযোগ্য চাপ বাড়েনি। মূল চাপ শুরু হবে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (ট্রাফিক) এস এম তানভীর আরাফাত বলেন, মেট্রোপলিটন এলাকায় ঘরমুখো মানুষ যেন নিরাপদে এবং ভোগান্তি ছাড়া ফিরতে পারে তা নিশ্চিত করতে অতিরিক্ত নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। সড়কে যেন গাড়ি রেখে কেউ ভোগান্তি না তৈরি করে এজন্য নির্দেশনা দেওয়া আছে। ভোগান্তিমুক্ত যাত্রার নিশ্চয়তা দিতে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি।
এদিকে, সড়ক পথে যাত্রী বাড়লেও কমেছে নৌ-পথে। ঈদের ছুটি শুরু হলেও এখন পর্যন্ত চোখে পড়ার মতো ভিড় লক্ষ্য করা যায়নি লঞ্চে। তবে বৃহস্পতিবার বিকেলের পর থেকে লঞ্চে যাত্রী বাড়বে বলে জানায় লঞ্চ কর্তৃপক্ষ।
বিআইডব্লিউটিএর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের বরিশাল নদী বন্দরের পরিদর্শক কবির হোসেন বলেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে লঞ্চর যাত্রী এখন অনেক কম। তবে ঈদ উপলক্ষে যাত্রীখরা কিছুটা কমেছে। আগের তুলনায় কিছু সংখ্যক যাত্রী বেড়েছে। তবে এক বছর আগেও যে ভয়ংকর রকমের চাপ ছিল তা নেই।
তিনি আরও বলেন, বুধবার ঢাকা থেকে ঢাকা-বরিশাল রুটের সাতটি লঞ্চ, দুটি ভায়া এবং একটি সরকারি স্টিমার যাত্রী নিয়ে এসেছে। বৃহস্পতিবার এই সংখ্যা বাড়বে।