ঢাকাSunday , 15 January 2023
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. ইসলাম
  5. এক্সক্লুসিভ
  6. খেলা
  7. জবস
  8. জাতীয়
  9. তথ্যপ্রযুক্তি
  10. ফিচার
  11. বিজ্ঞাপন
  12. বিনোদন
  13. মতামত
  14. রাজনীতি
  15. লাইফস্টাইল
আজকের সর্বশেষ সবখবর

নদীর বালু নদীতে, টাকা যাচ্ছে পানিতে

admin
January 15, 2023 1:10 am
Link Copied!

ঢাকা-বরিশাল নৌপথে বাড়ছে নাব্য-সংকট। শীত মৌসুমে তা আরও বাড়ে। দূরত্ব ১৮১ কিলোমিটারের মধ্যে ৫০ কিলোমিটারেই রয়েছে অসংখ্য ডুবোচর। ঝুঁকিপূর্ণ নৌপথগুলোয় প্রতিনিয়ত আটকে যাচ্ছে যাত্রীবাহী লঞ্চ ও পণ্যবাহী জাহাজ। নৌপথ সচল রাখতে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) দক্ষিণাঞ্চলের নদ-নদীতে ড্রেজার দিয়ে খননকাজ চালালেও তা নিয়ে রয়েছে বিস্তর অভিযোগ।

সুন্দরবন নেভিগেশন কোম্পানির পরিচালক সাইফুল ইসলাম পিন্টু বলেন, ড্রেজিংয়ের সময় উত্তোলনকৃত পলিবালি একশ থেকে দেড়শ মিটার দূরে নদীতেই ফেলা হচ্ছে। নদীতে না ফেলে অন্যত্র ফেললে বছর বছর এ সমস্যার সৃষ্টি হতো না। তিনি বলেন, ‘আমরা লঞ্চমালিকরা নদীর বালি নদীতে না ফেলে নিকটবর্তী চরে ফেলার অনুরোধ করছি। কিন্তু আমাদের কথা কেউ শোনে না। ড্রেজিং বিভাগ তাদের ইচ্ছেমাফিক কাজ করছে। খনন করা পলিবালি নদীতে ফেলার কারণে প্রতিদিন কী পরিমাণ অপসারণ করা হচ্ছে, তা-ও কেউ জানে না বা বলতে পারছে না। ফলে দক্ষিণাঞ্চলের কোথাও টেকসই ড্রেজিং হচ্ছে না। শুধু প্রতিবছর সরকারের কোটি কোটি টাকার অপচয় হচ্ছে।’ নিজাম শিপিংয়ের মালিক নিজামুল ইসলাম ঢাকা-বরিশাল নৌরুট বাঁচাতে পরিকল্পিত, টেকসই ড্রেজিং ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করেন।

আবুল কালাম আজাদ নামে একজন মাস্টার বলেন, ‘বরিশাল নৌবন্দর এলাকায় কীর্তনখোলা নদীতে দৈনিক দুই-তিন ঘণ্টা ড্রেজিং করা হয়। এজন্য ড্রেজিং বিভাগের নির্দিষ্ট কোনো সময় নেই। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত যখন খুশি তখন ড্রেজিং শুরু করে তারা। টার্মিনাল এলাকা থেকে লঞ্চগুলোকে নদীর মাঝে এসে নোঙর করতে হয় এবং জাহাজ এসে পড়লে সরিয়ে নিতে হয়। প্রতিদিন হয়রানির শিকার হই। অথচ রাত ৯টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত কীর্তনখোলা নদীর টার্মিনাল এলাকা খালি পড়ে থাকে। রাতে দুই-তিন ঘণ্টা ড্রেজিংয়ের কাজ করলে আমাদের এ ভোগান্তিতে পড়তে হয় না।’

বিভিন্ন লঞ্চের মাস্টাররা জানান, দক্ষিণাঞ্চলে বেশিরভাগ নৌরুটে রয়েছে নাব্য-সংকট। পণ্যবাহী ও যাত্রীবাহী নৌযান নির্বিঘ্নে চলাচলের জন্য কমপক্ষে ১২ মিটার পানি থাকার নিয়ম রয়েছে। তবে এ পথে চলাচলকারী নৌযানগুলোর আকার অনুযায়ী আট মিটার হলেও নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারে। কিন্তু কোনো কোনো এলাকায় দুই-তিন মিটার পানি পাওয়া যায়। ফলে নির্ধারিত পথ বাদ দিয়ে অতিরিক্ত ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার পথ ঘুরে চলাচল করতে হচ্ছে। এতে সময় ও খরচ উভয় বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মাস্টাররা জানান।

ডুবচরে একাকার নৌপথ

বরিশাল বিভাগের মধ্যে বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলার বিভিন্ন নদীতে নাব্য-সংকট সবচেয়ে বেশি। শীত মৌসুমে জোয়ার-ভাটার সময় প্রায় প্রতিদিন কোনো-না কোনো স্থানে নৌযান আটকে যায়। এমভি সুন্দরবন-১৬ লঞ্চের মাস্টার মো. মজিবুর রহমান বলেন, ঢাকা-বরিশাল রুটের নলবুনি থেকে ভবনী পর্যন্ত দেড়-দুই কিলোমিটার, হিজলা থেকে বাবুগঞ্জ পযর্ন্ত তিন কিলোমিটার, মেহেন্দীগঞ্জের উলানিয়া থেকে শাওরা পর্যন্ত তিন কিলোমিটারে সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য ডুবচর। এ ছাড়া বাউশিয়া-নলবুনিয়া চ্যানেল, বরিশালের শায়েস্তাবাদ সংলগ্ন কীর্তনখোলা ও আড়িয়াল খাঁসহ তিন নদীর মোহনা এবং বরিশাল টার্মিনাল-সংলগ্ন কীর্তনখোলা নদীতে নাব্য-সংকট চরম আকার নিয়েছে। অভ্যন্তরীণ নৌপথের মধ্যে ভোলার ভেদুরিয়া ও বরিশালের লাহারহাট ফেরিঘাট ও মেহেন্দীগঞ্জের পাতারহাট লঞ্চঘাট-সংলগ্ন এলাকায়, ঢাকা-পটুয়াখালী রুটে নদীতে পানি কম থাকায় প্রায়ই লঞ্চগুলো আটকা পড়ে। বাকেরগঞ্জের কারখানা নদীসহ কবাই ও পটুয়াখালী লঞ্চঘাট-সংলগ্ন এলাকায় বিআইডব্লিউটিএ নির্ধারিত গভীরতার চেয়ে অর্ধেকের কম পানি থাকে।

এমভি সুন্দরবন-১১ লঞ্চের মাস্টার আলমগীর হোসেন বলেন, বরিশাল নদীবন্দর থেকে চাঁদপুর পর্যন্ত পাঁচ-ছয়টি স্থান নাব্য-সংকটে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। চরশিবলী, নলবুনিয়া, বামনির চর, হিজলা ও মল্লিকপুর চ্যানেলটি সহজ পথ হলেও বিভিন্ন স্থানে চর জেগে তা বন্ধ হয়ে গেছে। বিআইডব্লিউটিএর নির্ধারিত চ্যানেল মেঘনার উলানিয়া-কালীগঞ্জ হয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। এতে গন্তব্যে পৌঁছতে প্রায় দুই ঘণ্টা সময় ও জ্বালানি ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসব এলাকায় নৌ-চলাচলে বেগ পেতে হয়। মিয়ারচর চ্যানেলটি বর্ষা শেষ হওয়ার আগেই বন্ধ হয়ে যায়। এ চ্যানেলটি বিআইডব্লিউটিএ অনুমোদিত নৌপথ না হলেও সময় ও খরচ বেঁচে যাওয়ায় লঞ্চমালিক ও চালকদের কাছে বেশ প্রিয়।