ঢাকাThursday , 2 March 2023
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. ইসলাম
  5. এক্সক্লুসিভ
  6. খেলা
  7. জবস
  8. জাতীয়
  9. তথ্যপ্রযুক্তি
  10. ফিচার
  11. বিজ্ঞাপন
  12. বিনোদন
  13. মতামত
  14. রাজনীতি
  15. লাইফস্টাইল
jahid faruk mp
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণে উত্তাল হয়ে উঠেছিলো বরিশাল

admin
March 2, 2023 1:32 am
Link Copied!

অনলাইন ডেস্কঃ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের পর পরই উত্তাল হয়ে উঠেছিলো গোটা বরিশাল। সংগঠিত হতে শুরু করেন এতদাঞ্চলের মুক্তিপাগল মানুষ। সে সময় বরিশালে পত্রিকা আসতো একদিন পর। তাই বঙ্গবন্ধু কি বলেছেন, ঢাকার খবর কি? এসব জানতে স্থানীয় নেতাদের বাড়িতে গভীর রাত পর্যন্ত ভিড় করতেন মুক্তিপাগল মানুষ।

বিশেষ করে বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ও এমএলএ নুরুল ইসলাম মঞ্জুরের শহরের পেশকার বাড়ির আঙিনা হয়ে উঠেছিলো মুক্তিপাগল মানুষের সমাবেশস্থল। প্রচন্ড উদ্বেগ ও উৎকন্ঠার মধ্যে পরবর্তী নির্দেশ পাওয়ার জন্য অস্থির ছিলেন বরিশালের মুক্তিকামী মানুষ।

বরিশাল শহরে স্থায়ী মঞ্চ করে প্রতিদিন চলতে থাকে প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও গণসংগীত। পরবর্তীতে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বরিশালে চালু করা হয় ‘স্বাধীন বাংলার দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রথম সচিবালয়’। যা একমাস কার্যকর ছিলো। সেখান থেকেই মুক্তিযুদ্ধে বরিশালসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলের প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালিত হতো। যুদ্ধও পরিচালিত হয়েছে স্বাধীন বাংলার দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রথম সচিবালয় থেকে। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সামরিক সরঞ্জাম, খাদ্য-অর্থ সংগ্রহ ও সরবরাহ করা হতো ওই সচিবালয়ের মাধ্যমে।

বরিশাল অঞ্চলের মুক্তিযুদ্ধের মূল সংগঠক ও তৎকালীন এমএলএ নুরুল ইসলাম মঞ্জুরের আত্মজীবনীমূলক বইয়ে স্বাধীন বাংলার দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রথম সচিবালয়ের তথ্য তুলে ধরে উল্লেখ করা হয়, এটি স্থাপন করা হয়েছিল বর্তমান বরিশাল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে। সেখানে পরে স্থাপন করা হয়েছে ‘স্বাধীন বাংলার দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রথম সচিবালয়’এর একটি স্মারক।

ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের তৎকালীন অন্যতম সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রদীপ কুমার ঘোষ পুতুল বলেন, আমি তখন বরিশাল ল’ কলেজে আইনের ছাত্র ছিলাম। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের পর আমাদের কাছে (ছাত্রসমাজ) এটাই মনে হলো, পাকিস্তানীদের সাথে যুদ্ধ অনিবার্য। এটা আর রোধ করা সম্ভব নয়। আর সেসময় আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল ইসলাম মঞ্জুরের বাসা ছিলো আমাদের কন্ট্রোল রুম। সেখান থেকেই আমাদের সকল কর্মকা- পরিচালিত হতো। রাত-দিন ২৪ ঘন্টাই ছিলো তার বাড়িতে আমাদের অবস্থান।

তিনি আরও বলেন, যেহেতু বঙ্গবন্ধু ‘যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে’ বলেছেন। তাই বরিশালেও প্রত্যেকে নিজ নিজ অবস্থানে থেকে স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রাথমিক প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছিলো। যদিও যুদ্ধ সম্পর্কে আমাদের তখন কোন ধারণা ছিলোনা। শুধু দেশপ্রেম ও বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের নির্দেশে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ব্যানারে আমরা কাজ শুরু করে দেই। প্রায় প্রতিদিনই মিটিং মিছিলসহ নানা কর্মসূচি পালন করি।

এতদাঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধা সংগঠক ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সৈয়দ মনিরুল ইসলাম বুলেট ছিন্টু বলেন, ৭ মার্চের ভাষনের পর অগ্নিঝরা মার্চ মাসেই বঙ্গবন্ধুর ডাকে সারাদিয়ে বরিশালেও স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রাথমিক প্রস্তুতি গ্রহণ শুরু করা হয়। প্রত্যেক পাড়া-মহল্লায় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ গঠণ করা হয়েছিলো। যার যা কিছু আছে তাই নিয়েই যুদ্ধের প্রস্তুতি চলে। পরবর্তীতে ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধুুর স্বাধীনতার ঘোষণার মধ্যদিয়ে চূড়ান্তরূপে শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করা হয়।

তিনি আরও বলেন, ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষনের পর থেকে সাধারণ মানুষকে আন্দোলনের মধ্যে রাখার জন্য সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্বে প্রতিটি পাড়ায়, মহল্লায় অনুষ্ঠিত হতো সভা, সমাবেশ, গণসঙ্গীত, আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এসব অনুষ্ঠানে মুক্তিকামী মানুষের ঢল নামতো। মন্ত্রমুগ্ধের মতো শ্রোতারা শ্রবণ করতেন রক্তে আগুন জ¦ালা সেসব গান ও কবিতা। স্বাধীনতায় উজ্জীবিত করা সেসব গণসঙ্গীতে উদ্বেলিত হতো সাধারণ মানুষ। সেসব গানের মধ্যে গণসঙ্গীত শিল্পী আবু আল সাঈদ নান্টুর ‘জয় স্বাধীন বাংলা’ গানটি সব সভার অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠে। ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণে সর্বস্তরের জনতার কাছে করণীয় বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যায়।