অনলাইন ডেস্ক
দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে আবাসিক হল থেকে শিক্ষার্থীদের চলে যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। শিক্ষার্থীরা সেই নির্দেশনা উপেক্ষা করে আজ বুধবার দিনভর ক্যাম্পাসে অবস্থান করে বিক্ষোভ করেন। হল খোলা রাখাসহ নানা দাবি জানান। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের অভিযানে চল ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন তারা।
আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে অনেক শিক্ষার্থী আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। গুলিবিদ্ধ হন অনেকেই।
বিকেলের পর দেশের অনেক ক্যাম্পাসে পুলিশের সঙ্গে র্যাব ও বিজিবির উপস্থিতি দেখা যায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এই তিন বাহিনীর সঙ্গে রয়েছেন আনসার সদস্যরা। সন্ধ্যার পর দেখা যায়, ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল প্রায় ফাঁকা। সব শিক্ষার্থী ক্যাম্পাস ছেড়েছেন।
আজ বিকেলে আন্দোলনকারীদের সমন্বয়ক মাহিন সরকার সাংবাদিকদের বলেন, ‘গত দুই দিন আগে ছাত্রলীগ আমাদের ওপর যেভাবে হামলা চালিয়েছিল, সে কায়দায় তারা আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আবার আমাদের ওপর হামলা চালাচ্ছে। হলে কোনো শিক্ষার্থী নেই। আমাদের কাছে তথ্য আছে, হলেও পুলিশ আজ আক্রমণ চালাতে পারে।’
আন্দোলন চলবে জানিয়ে সমন্বয়ক বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলন এখানেই সমাপ্ত নয়। ক্যাম্পাস খুলবে। আমরা আমাদের মতো থাকব। আমাদের দাবিও দাবির জায়গাতেই থাকবে।’
কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর বিজিবি, র্যাব, পুলিশের হামলা, আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থীদের বিচারের দাবি, সন্ত্রাসমুক্ত ক্যাম্পাস নিশ্চিত ও কোটা সংস্কারে এক দফা দাবিতে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সারাদেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
আজ রাতে পাঠানো বার্তায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ এ ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে ওপর পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, সোয়াটের ন্যাক্কারজনক হামলা, খুনের প্রতিবাদ, খুনিদের বিচার, সন্ত্রাসমুক্ত ক্যাম্পাস নিশ্চিত ও এক দফা দাবিতে আগামীকাল ১৮ জুলাই সারাদেশে ‘‘কমপ্লিট শাটডাউন’’ ঘোষণা করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘শুধু হাসপাতাল ও জরুরি সেবা ব্যতীত কোনো প্রতিষ্ঠানের দরজা খুলবে না, অ্যাম্বুলেন্স ব্যতীত সড়কে কোনো গাড়ি চলবে না। সারাদেশের প্রতিটি স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানাচ্ছি আগামীকালকের কর্মসূচি সফল করুন।’
প্রসঙ্গত, কোটা সংস্কার আন্দোলনে গতকাল সংঘর্ষে ছয়জন নিহত হন। এমন পরিস্থিতিতে রাতেই দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে ইউজিসি। এমন ঘটনায় শিক্ষার্থীরা হলে থাকতে আন্দোলন করেন।