অনলাইন ডেস্কঃ ঝালকাঠিতে স্ত্রী হত্যার সঙ্গে জড়িত জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি আলী ইমাম খানকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। সোমবার বিকেলে ছাত্রলীগের অফিশিয়াল ফেসবুকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আবদুল্লাহ আল মাসুদ প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, কোনো ব্যক্তির অপকর্মের দায়ভার ছাত্রলীগ নেবে না। তাই স্ত্রীর হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অপরাধে জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি আলী ইমাম খানকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
এদিকে সোমবার সন্ধ্যায় নিহত তরুণী সায়মা পারভীনের বাবা শাহাদাত তালুকদার ঝালকাঠি সদর থানায় উপস্থিত হয়ে ছাত্রলীগের নেতা আলী ইমাম খানকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। এদিকে সায়মা পারভীনের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে তাঁর লাশ হস্তান্তর করেছে পুলিশ। লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেন ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা মেহেদী হাসান সানি। তিনি জানান, লাশের শরীরে পাঁচটি ছুরিকাঘাতের ক্ষত রয়েছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তরুণীর মৃত্যু হয়েছে।
নিহতের স্বজনেরা জানান, সোমবার রাতেই ঝালকাঠি সদর উপজেলার কেওড়া ইউনিয়নের নৌকাঠি গ্রামে বাবার বাড়িতে সায়মার লাশ দাফন করা হবে।
ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন সরকার বলেন, ঘাতক আলী ইমাম খানকে আসামি করে নিহত তরুণীর বাবা একটি হত্যা মামলা করেন। আগামীকাল মঙ্গলবার সকালে তাঁকে আদালতে পাঠানো হবে। সোমবার সকাল ১০টার দিকে আলী ইমাম খান স্ত্রীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে থানায় আত্মসমর্পণ করেন। ঝালকাঠির শহরতলির ইকোপার্ক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহত তরুণীর লাশ উদ্ধার করে। এ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিটি পুলিশ উদ্ধার করেছে। সায়মা পারভীন শহরের ফকিরবাড়ি এলাকার শাহাদাৎ তালুকদারের মেয়ে। সে ঝালকাঠি সরকারি মহিলা কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। এদিকে আলী ইমাম একই এলাকার দলিল লেখক দিদার হোসেন খানের ছেলে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, আলী ইমাম সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নিজের ফেসবুক টাইমলাইনে স্ট্যাটাস দেন, ‘আমার বউ পরকীয়ায় আসক্ত হয়েছিল, তাই নিজে খুন করেছি। এর জন্য আমি ছাড়া কেউ দায়ী নয়।’ এরপর দুপুর ১২টার দিকে সদর থানায় আত্মসমর্পণ করেন। সেখানে পুলিশের কাছে নিজের স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। পরে পুলিশ তাঁকে সঙ্গে নিয়ে শহরতলি ইকোপার্ক এলাকায় গিয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে।