নিজস্ব প্রতিবেদক
বরিশাল-পটুয়াখালী বাস মিনিবাস মালিক সমিতি। দক্ষিনের অভ্যন্তরীন রুটের যাতায়াত ব্যবস্থাপনার অন্যতম অরাজনৈতিক সংগঠন। ইতিপুর্বে আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে নেতৃত্বস্থানীয় পর্যায়ের ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নানান নেতিবাচক কর্মকান্ড পরিচালনায় বিভিন্ন মহলে সমালোচিত ছিল। চাঁদাবাজি, সাধারণ শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার বঞ্চিত, যাত্রী সেবা অনুন্নতসহ নানাবিধ অভিযোগে জর্জরিত ছিল এ প্রতিষ্ঠানটি। ৫ আগস্ট গণভ্যুথানে আওয়ামী সরকার পতনের পর সেই নেতৃত্ব প্রদানকারীদের আর দেখা যায়নি সমিতিতে। সমিতি পরিচালনায় অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়।
সমিতির এ ক্রান্তিলগ্নে সাধারন বাস মালিকদের অনুরোধে গঠনতন্ত্রের বিধি অনুযায়ী যথাযথভাবে সব কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে হাল ধরেন বর্তমান নগর বিএনপি’র পূর্ণাঙ্গ আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব মোঃ জিয়াউদ্দিন সিকদার। সভা ও সব মালিকদের যৌথ সম্মতিতে গঠিত হয় সাত সদস্যের আহবায়ক কমিটি। এতে আহবায়ক হিসেবে মনোনীত করা হয় জিয়াউদ্দিন সিকদারকে। দুরদর্শী এ নেতার সংযুক্তিতে সমিতি যেন প্রাণ ফিরে পায়। সেই সাথে উজ্জীবিত হন সাধারণ বাস মালিক ও শ্রমিকরাও। যাত্রী সেবায়ও আনয়ন হয় উন্নত ব্যবস্থাপনা। আর এই আহবায়ক কমিটিই দায়িত্বভার গ্রহণের পর থেকে ইতিবাচক ব্যবস্থাপনা ও সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে ইতিপুর্বের সব বিতর্কের অবসান ঘটায়। সমিতিসহ পুরো রুপাতলী এলাকা আনুষ্ঠানিক সব ব্যবস্থা গ্রহণের মধ্য দিয়ে চাঁদামুক্ত ঘোষণা করেন নবগঠিত কমিটির আহবায়ক। একইসাথে বাস মালিকদের নানা ইতিবাচক সিদ্ধান্তের সাথে সমর্থন জানিয়ে সমান তালে কাজ করে যাচ্ছে সমিতি’র সব সদস্যরা। মুক্ত মতামত পেশ করার মধ্য দিয়ে যৌক্তিক বিষয়গুলো বাস্তবায়িত হচ্ছে মাঠপর্যায়ে। বর্তমানে ইতিবাচক ও বিতর্কমুক্তভাবে পরিচালিত হচ্ছে এ সমিতি। যার কৃতিত্বেরভার পাচ্ছে নবগঠিত এ কমিটি।
এদিকে নবগঠিত এ কমিটির সব ইতিবাচক কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধে শুরু থেকেই একটি মহল নানান অপ-তৎপরতা চালিয়ে আসছিল। প্রথমে আহবায়ক জিয়াউদ্দিনকে নিয়ে নানান নেতিবাচক অভিযোগ বিভিন্ন মহলে তুললেও তা ঢোপে টেকেনি। আর এতে ব্যর্থ হয় স্বার্থান্বেসী ঐ মহলটি।
এবার তাদের অপ-তৎপরতার অংশ হিসেবে নজর পড়ে আহবায়ক কমিটির সদস্য মোঃ আলামিন হাওলাদারের ওপর। মালিক সমিতিতে শুরু থেকেই যুক্ত হয়ে আলামিনের দুরদর্শীতায় সমিতি উন্নয়নে অধিকাংশ কৃতিত্ব তিনি জুড়েই। তার ইতিবাচক সব কার্যক্রম ও দুরদর্শীতায় আরোপিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনে সক্রিয়তার পরিচয় বারংবার দিয়েছেন তিনি। এজন্যই সব মিশনে ব্যর্থ হয়ে আলামিনের দিকে ছোঁড়া হয়েছে অহেতুক অভিযোগের তীর। যদিও সেটি প্রতিরোধে ঐক্যবদ্ধ সব বাস মালিকরা। এমনটিই জানিয়েছেন সকলে।
সম্প্রতি আলামিনকে নিয়ে গণমাধ্যমসহ নানা সচেতন মহলে অহেতুক অভিযোগ দিয়ে তার ইতিবাচক কর্মকান্ড , সমিতি ও আহবায়ককে প্রশ্নবিদ্ধের মিশনে নেমেছে ঐ মহল। আর এসব নস্যাতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন বাস মালিকরা। উপস্থাপিত তথ্যে আলামিনকে শ্রমিক লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক বলে অভিহিত করা হয়। কিন্ত অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে উল্টো তথ্য। বাস্তবে আলামিন কোন দলীয় পদ-পদবীতে ছিলেন না। এছাড়া কোন দল কিংবা নেতার অনুসারীও ছিলেন না বলে অনুসন্ধানে সত্যতা মিলেছে। বাস মালিক সমিতি একটি অরাজনৈতিক ব্যবসায়িক সমিতি। ইতিপুর্বে তিনি ঐ সমিতি’র যুগ্ন সম্পাদক ছিলেন। তৎকালীন আওয়ামী লীগের সময়ে সমিতি’র প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ। তিনি পায়রা পরিবহনের স্বত্তাধীকারি ছিলেন।
যেহেতু ঐ সময়ে সাদিক সমিতি’র প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন এজন্য সমিতি বেঘবানে তার পরামর্শ নিতে হয়েছে নেতৃবৃন্দদের। আলামিনও তার ব্যতিক্রম করেননি। দল কিংবা কোন নেতার অনুসারী এসবের উর্ধে থেকে প্রধান উপদেষ্টাকে সমিতি’র একজন দায়িত্বশীল হয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মাত্র। সমিতি’ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যেহেতু ঐ সময়ে সাবেক মেয়র সাদিক ছিলেন এখানের প্রধান উপদেষ্টা সেহেতু তাকে সমিতি’র পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা জানানো কোন দল কিংবা নেতার অনুসারী বলে প্রমাণিত হয়না। বর্তমানে এটিকে পুঁজি করে ইস্যু বানানো হচ্ছে অসাধু মহলের অপ-তৎপরতা। আর আওয়ামী পহ্নি নেতৃত্বস্থানীয় পর্যায়ের সিংহভাগ এ সমিতি থেকে পলায়ন করেছেন। মুষ্টিমেয় আওয়ামী পহ্নি ২/১ জন বাস মালিক সদস্য পিছনে থেকে এ সমিতিকে প্রশ্নবিদ্ধে পাঁয়তারা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে আলামিনকে জড়িয়ে বাস মালিকদের জিম্মি করার অভিযোগ তোলা হয় উপস্থাপিত তথ্যে। এটি নিয়ে সাধারন বাস মালিকদের দোরগোড়ায় সত্যতা যাছাই করা হয়েছে। অভিযোগের সাথে বাস্তবিক অর্থে হয়রানীর উদ্দেশ্যে আলামিনকে দাবার গুটি হিসেবে ব্যবহার করছে অসাধু মহল বলে সত্যতা মিলেছে সাধারণ বাস মালিকদের বক্তব্য ও অপপ্রচারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ অবস্থানের মধ্য দিয়ে।
বাস মালিক সমিতি’র সদস্য মহিউদ্দিন সরদার বলেন, ইতিপুর্বের চেয়ে বরিশাল-পটুয়াখালী বাস মালিক সমিতি নির্বিঘ্নে সব ইতিবাচক কার্যক্রম পরিচালনায় সক্ষম হচ্ছে। নয়া নেতৃত্ব এর কৃতিত্ব বহন করছে। সব সমালোচনাকে পিছনে ফেলে যাত্রী ও সাধারণ মালিকদের উন্নয়নে কাজ করছে এ সমিতি। সকলের মতামতের ভিত্তিতে এখন যথাযথ সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগ হচ্ছে। আলামিন সমিতি’র আহবায়ক কমিটি’র সদস্য। আমরা তার মধ্যে ছিটেফোটা কোন ক্ষমতার দাপট দেখিনি।
সাধারণ বাস মালিকদের মতই নিজের ওপর আরোপিত দায়িত্ব পুর্বের ন্যায় যথাযথভাবে পালন করে যাচ্ছেন তিনি। আমরা নবগঠিত কমিটির কার্যক্রমে সন্তস্ট। একইসাথে সকলের যৌথ মতামতে সমিতির’র যেকোন সিদ্ধান্ত এখন গৃহীত হয়। সেখানে আলামিন কেন আমাদের জিম্মি করে আর কিভাবে রাখবেন? এমন প্রশ্নই আসেনা । এছাড়া তিনি আমাদের কোন বিষয়ে হুমকিও দেননি। বরংচ যথাযথ দায়িত্বশীলতায় আলামিনের ইতিবাচক সব কর্মকান্ডে সর্বদা প্রশংসিত। এছাড়া তিনি কোন দল কিংবা নেতার অনুসারীও নন বা কখনো ছিলেনও না।
এদিকে উপস্থাপিত তথ্যে মালিক সমিতি’র সদস্য পদ বাতিলে আলামিন হুমকি দিচ্ছেন এমন অভিযোগেরও সত্যতা পায়নি অনুসন্ধানী প্রতিবেদক। সদস্য পদ বাতিলের ক্ষমতা আলামিন রাখেন না । কারন সদস্য পদ বাতিলে যোক্তিক কারণ পরিলক্ষিত হতে হয়। একইসাথে সমিতি বিরোধী কোন ব্যক্তি কোন কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করলে সেক্ষেত্রে বাস মালিকদের এক তৃতীয়াংশের সম্মতি প্রকাশের প্রয়োজন পড়ে। তাদের মতামত অনুযায়ী সিদ্ধান্ত হয় অভিযুক্ত ব্যক্তির সদস্য পদ বাতিল না বহাল থাকবে।
এদিকে দুরদর্শী বাস মালিক সমিতি’র এ সদস্যের বিরুদ্ধে অপ-প্রচারে বাস মালিকদের পাশাপাশি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সমিতি’র স্টাফরাও। যারা প্রতিস্থালগ্ন থেকে সমিতি’তে চাকুরীরত।
এর মধ্যে অফিসের প্রধান সহকারী জগদ্বীশ চন্দ্র রায় জানিয়েছেন- আমি সমিতি’র প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে অদ্যবধি পর্যন্ত চাকুরী করে আসছি। আলামিন প্রথমে বাস মালিক সমিতি’র লাইন সম্পাদক ছিলেন। এরপর যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নিজের ওপর আরোপিত দায়িত্ব সব বিতর্কের উর্ধে থেকে নিজেকে পরিচ্ছন্ন একজন সাধারণ বাস মালিক সমিতির সদস্য হিসেবে সমিতি পরিচালনায় ইতিবাচক কর্মধারায় সহায়তায় সক্রিয় রয়েছেন। এখন নতুন আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। আহবায়ক জিয়াউদ্দিন সিকদারের মত যোগ্য নেতৃত্বের বিকল্প নেই।
কারণ ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত জিয়া ভাই অত্যন্ত দুরদর্শীতা ও সুনামের সাথে সমিতি’র সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে গেছেন। ৫ আগস্টের পর নেতৃত্বহীন সমিতিতে আবারও তার শুন্যাতা অনুভব করেন বাস মালিকরা। সকলের অনুরোধে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আহবায়ক কমিটির দায়িত্বভার তার ওপর আরোপিত হয়। তার যোগ্য নেতৃত্বে পিছিয়ে পরা মালিক সমিতি আবারও প্রাণ ফিরে পায়। একইসাথে সমিতিতে আলামিন তার দুরদর্শীতায় স্থান পায়। আমার এ দীর্ঘ চাকুরীতে আলামিনকে কখনো কোন নেতিবাচক কর্মকান্ডে জড়িত থাকতে দেখিনি। যখন যে দায়িত্বভার পেয়েছেন সে দায়িত্ব অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে পালন করে গেছেন। তিন কোন বাস মালিকদের জিম্মি কিংবা কাউকে হুমকি প্রদানও করেননি। এছাড়া কোন দলেরও অনুসারী ছিলেন না তিনি। আমরা অপ-প্রচারকারীদের নিন্দা ছুড়ছি। ঐসব কুচক্রী মহলের বিরুদ্ধে আমরা ঐক্যবদ্ধ।
এদিকে সাধারণ বাস মালিক শাওন পাল অমিত, ফয়সাল জানান- ৫ আগস্টের পর এই মালিক সমিতি প্রাণ ফিরে পেয়েছে। আমরা স্বস্তি পেয়েছি। নতুন আহবায়ক জিয়াউদ্দিন সিকদার ভাই অত্যন্ত দুরদর্শী ও আন্তরিক একজন ব্যক্তি । তার নেতৃত্বে বাস মালিক সমিতি সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালিত হচ্ছে। কোন প্রকার চাঁদা আদায় হচ্ছে না। এছাড়া আলামিন ভাই মালিক সমিতির অনেক পুরনো সদস্য। তিনি অত্যন্ত দক্ষ একজন ব্যক্তি। তার ইতিবাচক কর্মকান্ডে আমরা সন্তস্ট। তিনি আমাদের কখনোই জিম্মি কিংবা হুমকি প্রদান করেননি কোন বিষয়ে । মুলত একটি মহল সমিতি’র ইতিবাচক কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। একইসাথে তারা এখন ফায়দা লুটতে পারছেন না। এজন্যই নানামাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে হয়রানী করছেন। আমরা এর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ অবস্থানে রয়েছি।