ইসলাম ডেস্ক
বৃষ্টি আল্লাহর রহমতের নিদর্শন। বিশেষত দীর্ঘ দিন অনাবৃষ্টির পর বা তীব্র গরমের পর বৃষ্টি আল্লাহর অনেক বড় নেয়ামত হিসেবে আসে। বৃষ্টির মাধ্যমে আল্লাহ পৃথিবীতে তার রহমত ও দয়া ছড়িয়ে দেন। আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَهُوَ الَّذِي يُنَزِّلُ الْغَيْثَ مِن بَعْدِ مَا قَنَطُوا وَيَنشُرُ رَحْمَتَهُ وَهُوَ الْوَلِيُّ الْحَمِيدُ
মানুষ নিরাশ হয়ে যাওয়ার পর তিনিই বৃষ্টি বর্ষণ করেন এবং তার রহমত ছড়িয়ে দেন, তিনি-ই সকল গুণে প্রশংসিত প্রকৃত অভিভাবক। (সুরা শূরা: ২৮)
বৃষ্টির পানি আল্লাহর পক্ষ থেকে বরকত নিয়ে আসে, রিজিক নিয়ে আসে। বৃষ্টির পানিতে মৃত ভূমি সজিব হয়। ফল-ফসল উদগত হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَ نَزَّلۡنَا مِنَ السَّمَآءِ مَآءً مُّبٰرَكًا فَاَنۡۢبَتۡنَا بِهٖ جَنّٰتٍ وَّ حَبَّ الۡحَصِیۡدِ
আমি আকাশ থেকে বর্ষণ করি কল্যাণকর বৃষ্টি আর তা দিয়ে সৃষ্টি করি বাগ-বাগিচা ও কর্তনযোগ্য শস্যদানা। (সুরা কাফ: ৯)
উম্মুল মুমিনীন আয়েশা (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন বৃষ্টি দেখতেন, তখন বলতেন, এ তো আল্লাহর রহমত। (সহিহ মুসলিম: ১৯৫৭)
অনেক সময় বৃষ্টি হলে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বৃষ্টিতে ভিজতেন। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা আল্লাহর রাসুলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সঙ্গে ছিলাম, এ সময় বৃষ্টি শুরু হলো। আল্লাহর রাসুল (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার শরীরের ওপরের অংশ থেকে কাপড় সরিয়ে দিলেন। ফলে তাঁর শরীর ভিজে গেল। আমরা জিজ্ঞাসা করলাম, হে আল্লাহর রাসুল! আপনি কেন এ রকম করলেন? তিনি উত্তরে বললেন,
لِأَنَّهُ حَدِيثُ عَهْدٍ بِرَبِّهِ تَعَالَى
যেহেতু মহান প্রভুর কাছ থেকে সদ্য আগত (তাই আমি শরীরে লাগিয়ে নিলাম বরকতের জন্য)। (সহিহ মুসলিম: ১৯৫৬)
তবে অতিবৃষ্টি বা যে বৃষ্টি মানুষের জন্য ক্ষতিকর, যে বৃষ্টিতে মানুষের ঘরবাড়ি ডুবে যায়, ফসল নষ্ট হয়, এ রকম বৃষ্টি থেকে মুক্তির জন্যও আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দোয়া করেছেন। হাদিসে এসেছে, নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একবার অতিবৃষ্টির সময় দোয়া করেছিলেন,
اللَّهُمَّ حَوَالَيْنَا، وَلاَ عَلَيْنَا
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা হাওয়ালাইনা ওয়ালা আলাইনা
অর্থ: হে আল্লাহ আমাদের আশপাশে (জনবসতির বাইরে) বৃষ্টি দাও, আমাদের ওপর নয়। (সহিহ বুখারি: ৯৩৩)
বৃষ্টির সময় আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দোয়া করতেন,
اللَّهُمَّ صَيِّبًا نَافِعًا
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা সায়্যিবান নাফিআন।
হে আল্লাহ কল্যাণকর বৃষ্টি দাও। (সহিহ বুখারি: ৬৯১)