বরিশালে ২০১৬ সালে ধর্ষণ এবং আত্মহত্যার প্ররোচনার ঘটনায় আসামী সায়েম আলম মিমুকে ধর্ষণের দায়ে যাবজ্জীবন এবং আত্মহত্যার প্ররোচনার দায়ে ১০ বছরের কারাদন্ড প্রদান করেছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। গতকাল রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বরিশালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. আবু শামীম আজাদ আসামীদের উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষনা করেন। ভিকটিমের বাবা ইব্রাহিম খলিল ও তার পরিবার এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। ঐ আদালতের স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট ফয়জুল হক ফয়েজ জানান, ধর্ষণের দায়ে আসামী মিমুকে যাবজ্জীবন ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, আত্মহত্যার প্ররোচনার দায়ে ১০ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও ২৫ হাজার টাকা জরিমানা প্রদান করা হয়। এছাড়া চুরির কারনে ৫ বছরের কারাদন্ড এবং ৫ হাজার টাকা জরিমানা প্রদান করা হয়। ২০১৬ সালের ১০ আগষ্ট বরিশাল নগরীর চকবাজারের হোটেল ফেয়ার স্টারে এই হত্যার ঘটনা ঘটে। নগরীর মুসলিম গোরস্থান রোডের বাসিন্দা ও এসএসসি পরীক্ষার্থী নাঈমা ইব্রাহিম ঈশীর লাশ ২০১৬ সালের ১০ আগস্ট ঐ হোটেল থেকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তার বাবা ইব্রাহিম খলিল বাদী হয়ে ঐ দিনই কোতোয়ালী মডেল থানায় মামলাদায়ের করেন।মামলা সূত্র ধরে পুলিশ ঐ হোটেলের মালিক আব্দুর রাব বিশ্বাস এবং ম্যানেজার মজিবুর রহমান আকনকে গ্রেফতার করে। পরে তাদের দেয়া তথ্যানুসারে ফেসবুক প্রেমিক সায়েম আলম মিমুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মামলার বিবরণে জানা যায়, ঐ হোটেলের ৩০৯ নম্বর কক্ষ স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ভাড়া নেয়া হয়। এরপরে ঈশীকে ধর্ষণ করে মিমু। ধর্ষণের ঘটনায় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে হোটেলের ঐ কক্ষের সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলে আত্মহত্যা করে ঈশী। এসময় তার মোবাইল ও স্বর্নালংকার নিয়ে আসামী মিমু পালিয়ে যায়। অসামাজিক কার্যকলাপ তৈরির সুযোগ করে দেয়ায় হোটেল মালিক ও ম্যানেজারকে গ্রেফতার করেছিলো পুলিশ। এ ঘটনায় ২০১৭ সালের ৩১ মার্চ চার্জশীট দাখিল করা হয়। ১৯ জনের সাক্ষ্যপ্রমান শেষে হোটেল মালিক ও ম্যানেজারের সাথে ঘটনার সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ায় তাদেরকে খালাশ প্রদান করেন। আর সায়েমের সংশ্লিষ্টতা প্রমানিত হওয়ায় তাকে আদালত উক্ত রায় প্রদান করেন।