অসমাপ্ত বাখেরগঞ্জ গোমা সেতুর কারনে এরাকাবাসীর ভোগান্তি এখন চরমে পৌছেছে। ২০১৮ সালের শেস দিকে দীর্ঘ প্রতিক্ষিত গোমা সেতুর নির্মানকাজ শুরু হয়। প্রায় ৫০ ভাগ কাজ শেষ হবার পরে নির্মানাধীন সেতুর উচ্চতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়। ওই রুট দিয়ে প্রতিদিন অসংখ্য ছোটবড় নৌযান চলাচল করে,বিশেষ করে ঢাকাগামি দ্বীতল এবং তিনতলা বিশিষ্ট লঞ্চগুলোর উচ্চতা বেশি হবার কারনে, বর্ষা মৌসুমে লঞ্চের উপরিভাগ সেতুর তলায় আটকে যাবার আশংকা দেখা দেয়ায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওই কাজ বন্ধ করে দেয়। তারপর থেকে অদ্যাবধি সেতুর নির্মানকাজ আর শুরু করা যায়নি। ফলে ওই অঞ্চলের হাজারো মানুষের যাতায়াতের ভোগান্তি এখন চরমে পৌছেছে। এই সুযোগককে কাজে লাগিয়ে এক শ্রেনীর টাউট বাটপার ছোট নৌকার মাধ্যমে নদী পারাপার এর জন্য অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। যদিও ফেরি রয়েছে,তবে তা দীর্ঘক্ষন পরে যাত্রি ও যানবাহন পারাপার করার কারনে ছোট নৌকায় সাধারন মানুষ তারাতারি নদী পারাপার হবার জন্য নৌকার দ্বারস্থ হচ্ছে। সেখানে জনপ্রতি ভাড়া নেয়া হয় ১০ টাকা আর মোটরসাইকেল এর জন্য ৩০ থেকে ৪০ টাকা। এছাড়া ফেরি পারাপারেও গাড়ি প্রতি২০০ টাকা নিচ্ছে। ওই অঞ্চলের কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন এই রাঙ্গাবালি নদী পারাপার হয়। এছাড়া ব্যবসায়ীরাও তাদের পন্য সামগ্রী বহনের জন্য একমাত্র এই ফেরি বা নদীর উপর নির্ভরশীল। সেতুটি অসমাপ্ত এবং কাজের সিদ্ধান্তহীনতার কারনে, পূর্বের মতই চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছে। (বিআইডব্লিউটি)এর মতে বরিশাল থেকে ২২ কিলোমিটার দুরে অবস্থিত এই নদীতে প্রতিদিন ঢাকা-গোমা লঞ্চ চলাচল করে। সেতুটি নির্মান হলে বাখেরগঞ্জ-বাউফল-পটুয়াখালি রুটে যাতায়াত সুবিধা হত। সওজ এর তথ্যমতে,বরিশাল দিণারের পুল ৬ কিলোমিটার এবং লক্ষীপাশা দুমকি বাউফলের জন্য ২২ কিলোমিটার স্থানে রাঙ্গাবালি নদীর উপর ২০১৮ সালে(গোমা সেতু) নির্মানের উদ্দোগ নেয়া হয়,সেমতে ২৮৩ দশমিক ১৮৮ মিটার সেতু নির্মান কাজও শুরু করে বিআইডব্লিউটিএ, তবে পানি থেকে স্প্যানের উচ্চতা কম রাখা হয়, এতে আপত্তি উঠলে বন্ধ হয়ে যায় কাজ। প্রথম আপত্তি অগ্রহনযোগ্য হবার পরে পুনুরায় কাজ শুরু হয়ে ২০২১ সালে জুন মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা ছিল। তবে তা আর হয়ে ওঠেনি। বাংলাদেশ আভ্যন্তরিন নৌ চলাচল ও পরিবহন সংস্থার পরিচালক মোহাম্মদ মামুন অর রশিদ বলেন, কোন নদী ও নৌপথ বন্ধ হোক তা সরকার চায়না। কিন্তু উচ্চতা না বাড়িয়ে সেতুটি নির্মান করলে ওই পথে যাত্রি লঞ্চ ও নৌ চলাচল ব্যহত হবে। বিআইডব্লিউটি এর নৌপথ ও সংরক্ষন সংস্থার পরিচালক বিভাগের দক্ষিন ব-দ্বীপ অঞ্চলে যুগ্ন পরিচালক এস এম আজগর আলি বলেন, এই সেতুটি অত্বন্ত গুরুত্বপুর্ন তবে এখানে দ্বিতীয় শ্রেনীর উচ্চতা ছাড়া সেতু নির্মান করলে নৌ চলাচল ব্যাহত হবে। এখানে প্রয়োজন তৃতীয় শ্রেনীর উচ্চতার। জোয়ারের পানি ৭ দশমিক ৬২ মিটার অর্থাৎ ১২ দশমিক ২ মিটার দৈর্ঘতা বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রতিবেদন দিয়েছি। তবে সওজ বরিশাল বলছে উল্টো কথা,বরিশার সওজের নির্বাহি প্রকৌশলী মোঃ মাসুদ খান বলেন, এই সেতু নির্মাানের আগে বিআইডব্লিটিএর ছাড়পত্র নেয় হয়। তারপর হঠাৎ করে বিআইডব্লিটিএ আপত্তি জানায় এবং কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। হাজারো মানুষ এখন নৌকা ও ফেরি কর্তৃপক্ষের নিকট অনেকটা জিম্মি হয়ে রয়েছে। তবে তারা আশায় বুক বাধছে এই ভেবে, অদুর ভবিষ্যতে শেষ হবে তাদের কাঙ্খিত গোমা সেতুর কাজ।